সুসময়ে অনেকেই বন্ধু বটে হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়
ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাবঃ সুদিনে অনেক বন্ধু জুটলেও দুর্দিনে তাদের পাওয়া যায় না। দুর্দিনে-দুঃসময়ে যেন কেউ কারো নয়।
ভাবসম্প্রসারণঃ মানবজীবন সুখ-দুঃখের খেলা। সবার জীবন সব সময় সমানভাবে কাটে না। কখনো সুখ, কখনো দুঃখ, কখনো হাসি, কখনো কান্না মানবজীবনের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সুখের সময় আমাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজনের কোনো অভাব থাকে না। অনাত্নীয়রাও তখন আত্নীয় পরিচয় দিয়ে থাকে। কিন্তু দুর্দিন এলে সত্যিকারের আত্নীয় বন্ধু ছাড়া আর কারো খোঁজ খবর থাকে না। অনেক সময় মানুষ কঠিন কোনো বিপদে পড়লে অতি আপনজনেরাও সরে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়, বিপদে পড়লে অনেকে শত্রুতা করে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। কিন্তু যারা এমনটি করে তারা মানুষ নয়। তাদের মধ্যে মানবতা বলে কিছু নেই। আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষই হলো সুযোগ সন্ধানী; স্বার্থপর। কারো সুদিন দেখলে সবাই তার পিছে ঘুর ঘুর করে। তাকে আদর-সম্মান করে মাথায় তুলে রাখে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে যদি সে কোনো বিপদে পড়ে, যদি তার অর্থ-সম্পদ ফুরিয়ে যায়, তখন আর কেউ তার দিকে ফিরেও তাকায় না।
উঠতে বসতে দুধের মাছির মতো যারা লেগে থাকত চারপাশে, তাদের কাউকেই আর খুঁজে পাওয়া যায় না। একবার ডেকে জিঙ্গেস করে না কীভাবে চলছে তার দিন। সবাই ভাবে কাছে গেলেই হয়তো কোনো ঝামেলায় জড়াতে হবে। সেজন্যই সবাই পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করে। কথায় বলে- অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়। দুর্দিনে মানুষ যেমন অসহায় হয়ে পড়ে, তেমনি কেউ কারো থাকে না, এমনকি স্ত্রী-পুত্রের মতো আপনজনও তখন কটাক্ষ করে কথা বলে। অর্থাৎ সুদিনের বন্ধু সবাই। কিন্তু দুর্দিনে কেউ কারো নয়। তাবে যারা প্রকৃত বন্ধু, তারা সুদিন, দুর্দিন- সবসময়ই মানুষের পাশে থাকে।
মন্তব্যঃ যারা বসন্তের কোকিল, তারাই সুদিনে থাকে, দুর্দিনে কেটে পড়ে। কিন্তু যারা প্রকৃত মানুষ তারা সবসময়ই পাশে থাকে।