শবে মে’রাজ ও শবে মে’রাজের ফজিলত

শবে মে’রাজ

শবে মে’রাজঃ রজব মাসের রাতকে শবে মে’রাজ বলে । রাসূলের (সাঃ) মে’রাজ একটি অতি আশ্চর্য ও আলৌকিক ঘটনার রাত যাহা ছিল মানুষের মানুষের জ্ঞানের বাহিরে। রজব মাসের ২৭শে রাত হুজুরে আকরাম (সাঃ) -এর পবিত্র ওমর যখন পঞ্চাশ বৎসর তিন মাস পরিপূর্ণ হয়, তখন মক্কা নগরী হতে এই অলৌকিক ঘটনা সংঘঠিত হয়েছিল। শবে মে’রাজে আল্লাহর সাথে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দীদার লাভ হয়। ইহা স্রষ্টা ও সৃষ্টির এক অদ্ভত মিলনের দৃষ্টান্ত। মে’রাজের সত্যতা অস্বীকার করে মহা গোনাহগার হতে হবে।

মে’রাজের রাত কি ? হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই মে’রাজের রাত্রে বোরাক নামক বাহনে আরোহণ করে সর্বপ্রথম বায়তুল মোকাদ্দাস এবং পরে আরশে মোআল্লায় যান। তথায় খোদা তাআলার দীদার লাভে ধন্য হন। তিনি (সাঃ) এই ভ্রমণে বেহেশত-দোজখ দর্শন করেন এবং খোদা তাআলার সহিত দীর্ঘ সময় আলাপ-আলোচনা করে তৃপ্তি সাধন করে। এই সময়ই উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও একমাস রোজার জন্য আদিষ্ট হন; তথায় দীর্ঘকাল অবস্থান করে বহু কিছু দর্শন করার পর তিনি গৃহে ফিরে আসে। এই কুটি কুটি বৎসরের রাস্তা তার নিকট  এক সেকেন্ড হতেও কম বোধ হয়েছিল। যে স্থানে তিনি অযু করে গিয়েছিলেন তখন ও তথা হতে অযুর পানি গড়াইয়া যাইতেছিল। ঘরের দরজাগুলি হেলিতেছিল, এই বিষয়গুলি ছিল আল্লাহর মহান কুদরতের নিদর্শন। অতএব, এই রাত্রে নফল নামাজ ও কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করিলে এবং দিবসে রোজা রাখে অসীম সওয়াব হয়।

শবে মে’রাজের ফযীলত

হযরত সালমান ফারসী (রহ) হতে বর্ণিত রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেন রজব মাসে একটি দিন ও একটি রাত আছে, যদি কেউ ঐ দিন রোজা রাখে এবং রাত ইবাদত করে তাহলে তার এই পরিমাণ সওয়াব হবে যে, সে যেন একশত বছরের রোজা রাখল এবং একশত রাতের ইবাদত করলো। ঐ রাত ও দিন ২৭শে রজব।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই বেহেশতের মধ্যে একটি নদী আছে একে রজব বলে। এর পানি অত্যন্ত সাদা। যে ব্যক্তি রজবের মাসে রাখবে তাকে আল্লাহ তায়ালা এ নদীর পানি পান করবেন সেই পানি মধু হতে মিষ্টি ও বরফ হতে ঠান্ডা এবং তিনি ইহাও বলেন যে ব্যক্তি রজব মাসে রোযা রাখে সে ব্যক্তি দোযখের আগুন হতে মুক্তি পাবে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, একদিন রাসূলূল্লাহ (সাঃ) কবরস্থান দেখিলেন, একটি কবরে একটি মুর্দারের উপর হচ্ছে এবং সে চিৎকার করে কেঁদে বলে, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে দোযখের আগুন জ্বালাচ্ছে এবং আমার কাফন আগুন হয়ে গেছে। তখন হুজুর (সাঃ) বলেন, তুমি যদি রজব মাসে একটি রোজাও রাখতে তাহলে তোমার উপর এরুপ আযাব ভোগ করতে না। পরে রাসূলুল্লাহ তখন আল্লাহ পাক তাকে মাফ করে দিবেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!