সোনালী কাবিন কবিতাঃ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম কবি আল মাহমুদের সোনালী কাবিন কবিতা। আশা করছি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। আরো পড়ুন>>> কবি আল মাহমুদ
সোনালী কাবিন কবিতা-১
সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়না হরিণী
যদি নাও দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দুটি,
আত্মবিক্রয়ের স্বর্ন কোনোকালে সঞ্চয় করিনি
আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রূূকুটি;
ভালবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চূম্বন,
ছলনা জানিনা বলে আর কোনো ব্যাবসা শিখিনি
দেহ দিলে দেহ পাবে দেহের অধিক মূলধন
আমরাতো নেই শখি, যেই পন্যে অলংকার কিনি !!
বিবসন হও যদি দেখতে পাবে আমাকে সরল
পৌরষ আবৃত করে জলপাই পাতাও থাকবেনা,
তুমি যদি খাও তবে আমাকেও দিও সেই ফল
জ্ঞানে ও অজ্ঞানে দোঁহে পরস্পর হব চিরচেনা
পরাজিত নই নারী, পরাজিত হয়না কবিরা;
দারুণ আহত বলে আর্ত আজ শিরা- উপশিরা !!
এ-তীর্থে আসবে যদি ধীরে অতি পা ফেল সুন্দরী,
মুকুন্দরামের রক্ত মিশে আছে এ মাটির গায় !!
ছিন্ন তালপত্র ধরে এসো সেই গ্রন্থ পাঠকরি
কত অশ্রূ লেগে আছে এই জীর্ণ তালের পাতায় !!
কবির কামনা হয়ে আসবেকি হে বন্য বালিকা
অভাবের জগর জেনো তবে আমার টোটেম,
সতেজ খুনের মত এঁকে দেব হিঙুলের টিকা !!!!
সোনালী কাবিন কবিতা-২
আমার ঘরের পাশে ফেটেছে কি কার্পাশের ফল ?
গলায় গুঞ্জার মালা পরো বালা, প্রাণের শবরী,
কোথায় রেখেছে বলো মহুয়ার মাটির বোতল
নিয়ে এসো চন্দ্রালোকে তৃপ্ত হয়ে আচমন করি !!
ব্যাধির আদিম সাজে কে বলে যে তোমাকে চিনবো না
নিষাদ কি কোনদিন পক্ষিণীর গোত্র ভুল করে?
প্রকৃতির ছদ্মবেশে যে-মন্ত্রেই খুলে দেন খনা
একই জাদু আছে জেনো কবিদের আত্মার ভিতরে !!
নিসর্গের গ্রন্থ থেকে, আশৈশব শিখেছি এ-পড়া
প্রেমকেও ভেদ করে সর্বভেদী সবুজের মূল,
চিরস্থায়ী লোকালয় কোনো যুগে হয়নি তো গড়া
পারেনি ঈজিপ্ট, গ্রীস, সেরাসিন শিল্পীর আঙুল !!
কালের রেঁদার টানে সর্বশিল্প করে থর থর
কষ্টকর তার চেয়ে নয় মেয়ে কবির অধর !!!!