বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কহীন জীবন অন্ধ এবং জীবনের সঙ্গে সম্পর্কহীন বিদ্যা পঙ্গু ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাবঃ বিদ্যা জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ । বিদ্যাহীন জীবন অন্ধের সমান। আবার জীবনের সাথে সর্ম্পকহীন- অর্থহীন ও পঙ্গু । সেজন্যে বিদ্যার সাথে জীবনের এবং জীবনের সাথে বিদ্যার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করে উভয়ের সার্থকতা বিধান করতে হবে।
সম্প্রসারিত-ভাবঃ মানব সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহন করলেই যথার্থ মানুষ হওয়া যায় না। তাকে সাধনা করে প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে হয়। বিদ্যা মানব জীবনের অজ্ঞানতা, কুসংস্কার ও হৃদয়ের অন্ধকার দুর করে জীবনকে করে তোলে মহীয়ান ও সুষমামন্ডিত। বিদ্যাহীন লোকের কোন মূল্য নেই । বিদ্যার অভাবে সে অন্ধের মত জীবন যাপন করে। মানুষ অন্ধ হয়ে থাকতে চায় না বলে বিদ্যার এত চর্চা । জ্ঞানের সাধনার পথের শেষ নেই । বিদ্যার উদ্দেশ্য মানুষের চিন্তা-চেতনাকে পরিচালিত করা, দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করা।
বিদ্যা হবে জীবনমুখী, জীবনবিবর্জিত নয়। অর্জিত এই বিদ্যাকে জীবনের সাথে সর্ম্পকযুক্ত হতে হবে। জীবন বিমুখ বিদ্যা কোন কাজে আসে না। বরং জীবনকে তা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। অর্থাৎ জীবনের যে বিদ্যার কোন সর্ম্পক নেই, সে জীবন আলোক বর্জিত, অন্ধ। অন্য কথায় যে বিদ্যা জীবনের সাথে সর্ম্পকহীন, যা জীবনকে সামনের দিকে চালিত করতে পারে না। যা জীবনকে এগিয়ে নেয় না, সে বিদ্যা চলার গতি হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে। মানব জীবনকে সুন্দর, সতেজ ও সাবলীল করে গড়ে তুলতে হলে বিদ্যাকে অবশ্যই জীবনধর্মী হতে হবে। জীবনকে গতিময়, বাস্তব ও কর্মমুখী করতে হলে যেমন বিদ্যার্জন অত্যাবশ্যক, তেমনি অর্জিত-বিদ্যাও হতে হবে জীবনের সঙ্গে সর্ম্পকযুক্ত। বিদ্যা ছাড়া কোন জাতি যেমন স্বয়ংসর্ম্পূণ না তেমনি বিদ্যা ছাড়া কোন মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না। শুধু মানুষ হলেই চলবে না তার মধ্যে থাকতে হবে শিক্ষার প্রচার বিদ্যার আলো। বিদ্যার আলো একজন মানুষকে গড়ে তুলে সত্যিকারের জ্ঞানী মানুষ । তার মধ্যে সঠিক ব্যাক্তিত্ব প্রকাশ যার মধ্যে বিদ্যা থাকে।
সকল ব্যক্তি, জাতি তথা মানুষের মধ্যে থাকতে হবে বিদ্যার আলো । বিদ্যার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো। এমন একটা কথা আমরা জানি। বিদ্যা ছাড়া কোন বিক্লপ নাই।
মন্তব্যঃ বিদ্যার সাহায্যে জীবনকে সার্থক করে গড়ে তোলা যায়। কেউ বিদ্যা অর্জন করে তা জীবনে কাজে লাগাতে না পারলে তার পরিশ্রম মূল্যহীন বলে বিবেচিত হয়।