মধুর গুনাগুন ও উপকারিতাঃ মধু হল এক প্রকার মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। এটি উচ্চ ঔষুধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল এবং সুপেয়। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তূতিতে এর ব্যবহারে চিনির চেয়ে এর অনেক সুবিধা রয়েছে। অনেকে চিনির চাইতে মধুকে পচন্দ করে থাকেন। মধুর গুনাগুন ও উপকারিতা অনেক বেশি। আরো পড়ুন >>> অলিভ অয়েলের উপকারিতা
মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর মতে সকল পানীয় উপাদানের মধ্যে মধু সর্বোৎকৃষ্ট । তিনি বলেন, মধু এবং পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের চিকিৎসা নেয়া উচিত। ( সুনানে ইবনে মাজাহ, হাকেম ). রাসুলুল্লাহ (সাঃ) স্বয়ং সকাল বেলা খালি পেটে মধুর শরবত পান করতেন । যারা নিয়মিত মধুর শরবত পান করতে পারবেন তাদের জন্য তিনি বলেন , যে ব্যক্তি কমপক্ষে মাসে তিনদিন সকাল বেলা মধু চেটে সেবন করবেন, ঐ মাসে তার কোন কঠিন রোগ-ব্যধি হবে না। (সুনানে ইবনে মাজাহ্ মিশকাতুল মাসাবীহ).
মধুর গুনাগুন ও উপকারিতা
গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে মধু ব্যবহার করতেন। তিনি মধুকে অতিরিক্ত খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে র্দুবল শিশুদের মুখের অভ্যন্তরীন পচনশীল ঘা নিরাময়ে এটি খুবই উপকারী। মধু পাকস্থলীর বিভিন্ন প্রকার রোগে বিশেষ উপকারি।
১. ক্যান্সার ও হৃদরোগ থেকে মধু সাফা দান করে। ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধে মধু কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. পেটের রোগব্যধি, শরীরের পানি শুন্যতায়, শারীরিক দুর্বলতা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্যতায় নিম্মোক্তভাবে মধু ব্যবহার করতে হবে। একে হানি ওয়াটার থেরাপী বলা হয়।
৩. দুই চামচ দারু চিনি গুঁড়া, এক চামচ মধু এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে সেবন করলে মূত্রথলির জীবাণু ধ্বংস হয়।
৪. দাঁতের ব্যথা-দাঁত সর্বক্ষণিক ব্যথা হলে এক চামচ দারুচিনির গুড়া, পাঁচ চামচ মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে ব্যথাযুক্ত দাঁতের গোড়ায় ব্যবহার করলে ব্যথা ভাল হয়।
৫. দুই চামচ মধু এবং তিন চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া ১৬ আউন্স পানিতে মিশিয়ে কোলস্টেরলের রোগীকে সেবন করালে দুই ঘন্টার মধ্যে কোলস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে আনে। দিনে দুই বার করলে কোলস্টেরল জনিত রোগ উপশম করে।
৬. হার্টের রোগ নিরাময়ে মধু ও দারুচিনি ভালো কাজ করে।
৭. পাকস্থলীর সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিকজনিত ব্যথা ভালো হয় নিয়মিত মধু সেবন করলে।
৮. যারা সাধারণ বা তীব্র ঠান্ডায় ভোগে তাদের এক টেবিল চা চামচ হালকা গরম মধু ও দুই চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে দিনে একবার করে তিন দিন সেবন করতে হবে।
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিদিন মধু সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণ হতে দেহকে রক্ষা করে।
১০. বদহজম হতে রক্ষা করে মধু। দুই চা চামচ মধুর উপর সামান্য দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে খাবারের আগে সেবন করলে এসিডিটি কমে যায় এবং ভারী খাবার হজম হয়।
১১. ত্বকের কোন ইনফেকশন যেমনঃ একজিমা, দাউদ এবং অন্যান্য সব ধরনের ত্বকের ইনফেকশন থাকলে মধু ও দারুচিনি গুঁড়া সমপরিমাণ মিশিয়ে ত্বকের আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। দিনে দুবার এই ভাবে লাগাতে হবে প্রয়োজনে এক মাস লাগাতে হবে।