মাহে রমজানঃ রমজান সকল বিশ্বের মুসলিম উম্মাহদের জন্য রহমত সরুপ। যার পুরস্কার মহান আল্লাহতায়লা নিজ হাতে দিবেন। রোজা অর্থাৎ মাহে রমজান এর গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। আরো পড়ুন>>> রমজান
মাহে রমজান
কিছু আল-হাদীস
১. নবী করীম (সাঃ) বলেছেন যে রোযা থাকা অবস্থায় অন্যায় কথাবার্তা (গীবত, মিথ্যা, গালিগালাজ, অপবাদ, অভিসম্পাত ইত্যাদি) ছেড়ে না দেয়, তার এই পানাহার ত্যাগ আল্লাহ তাআলার কোন প্রয়োজন নেই ।
২. নবী করীম (সাঃ) আরও বলেনঃ তোমরা সেহরী খাও, কেননা সেহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত আছে।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আরও বলেছেনঃ যে ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে সিয়াম পালন করে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে।
৪. হুজুরে পাক (সাঃ) বলেছেনঃ যতদিন যাবত ওয়াক্ত হওয়ামাত্র তোমরা ইফতার করবে, ততদিন তোমরা কল্যাণের উপর থাকবে।
৫. নবী করীম (সাঃ) আরও বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, এর জন্য সে ব্যক্তি অনুরুপ সওয়াব পাবে।
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
কোন ব্যক্তি সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলা রুপা অথবা সমমূল্যের অন্য কোন মাল বা টাকা পয়সার মালিক থাকলেই তার উপর এবং তার পরিবারস্থ লোকের উপর ফিতরা ওয়াজিব হবে।
ফিতরা কাকে দেওয়া জায়েয
প্রত্যেক গরীব মিসকীনকেই ফিতরা দেওয়া জায়েয। তবে নিজের আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে গরীব মিসকীন থাকলে তাদেরকেই প্রথমে দিতে হবে। মাদ্রাসার গরীব ছাত্রদেরকেও তাদের পড়া-লেখার উন্নতির জন্য ফিতরা দেওয়া জায়েয আছে। ফিতরা দানকারী কখনও তার মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী বা নিজের ছেলে-মেয়েকে ফিতরা দিতে পারবে না।
রোযার কাফফারা ও ফিদয়া
১. ইচ্ছাকৃত রোযা ভাঙ্গার কাফফারা হল-একটি রোযার জন্য ২ মাস বিরতিহীনভাবে রোযা রাখতে হবে। আর যদি এটা সম্ভব না হয় তাহলে ৬০ জন মিসকীনকে দুবেলা তৃপ্তি সহকারে খাওয়াতে হবে।
২. অতি বৃদ্ধ/বৃদ্ধা যারা, তারা রোযা রাখতে সমর্থ হলে তা রাখবে, নাহয় প্রতিদিন একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াবে।
৩. যাহারা গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারীনী স্ত্রীলোকগণ যদি সন্তানের ক্ষতির আশংকা বোধ করে, তবে তারাও তাদের রোযার পরিবর্তে প্রতিদিন একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াবে।
এতেকাফের বর্ণনা
রমজানের ২০ তারিখে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্ব হতে ঈদের আগের দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত পুুরুষদের মসজিদে এবং স্ত্রীলোকদের তাদের ঘরের নিদির্ষ্ট স্থানে রোযার সহিত অবস্থান করাকে এতেকাফ বলে। রমজানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করা সুন্নাতে মোয়াক্বাদায়ে কেফায়া। অর্থাৎ-দুএকজনে এতেকাফ করলেই এলাকার সকলে দায়িত্ব মুক্ত হয়ে যাবে এবং কেউ না করলে সবাই গুনাহগার হবে। কারণ, ছহীহ হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, রাসূলে পাক (সাঃ) সর্বদা রমজানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করতেন।
এতেকাফ ৩ প্রকার
১. ওয়াজিব এতেকাফ মান্নত করা এতেকাফ ওয়াজিব। শর্তে হোক বা বিনা শর্তে হোক। এ এতেকাফ রমজান মাসে বা অন্য কোন মাসেও আদায় করা যায়। ওয়াজিব এতেকাফের জন্য রোযার শর্ত রয়েছে। অর্থাৎ -ওয়াজিব এতেকাফের সময় রোযা রাখতে হবে।
২. সুন্নাত (মোয়াক্বাদাহ) এতেকাফ রমজানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করা সুন্নাতে মোয়াক্বাদাহ। এই সুন্নাত দুএকজনে আদায় করলে সকলই দায়িত্ব মুক্ত হয়ে যায়, অন্যথায় সকলই সুন্নাত তরকের গুনায় লিপ্ত হবে। (রমজানের প্রথম থেকে বিশ তারিখ পর্যন্ত এতেকাফ করা মোস্তাহাব।)
৩. নফল এতেকাফ মান্নত ছাড়া রমজান ব্যতীত অন্য যে কোন সময় এতেকাফ করা নফল এতেকাফ।