মধুর উপকারিতা

মধুর উপকারিতাঃ মধু হল এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। এটি উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল এবং সুপেয়। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তূতিতে এর ব্যবহারে চিনির চেয়ে এর অনেক সুবিধা রয়েছে। এর বিশিষ্ট গন্ধের জন্য অনেকে চিনির চাইতে মধুকেই পছন্দ করে থাকেন। বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু স্বাদ,রং,হালকা সুগন্ধ এবং ঔষধিগুণাবলীর জন্য প্রসিদ্ধ। সুন্দরবনের বেশীরভাগ মধু কেওড়া গাছের ফুল থেকে উৎপন্ন। মধুর উপকারিতা অনেক সুন্দর বনের মাওয়ালী সম্প্রদায়ের লোকেরা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে এবং তা বিক্রয় করে জীবন নির্বাহ করে। মধুর অনন্যা গুণ হল এটি কখনও নষ্ট হয় না।                                                                                                                                   আরো পড়ুন>>> লেবুর উপকারিতা

মধু কি ?

মধু কি

খাদ্য ও ‍ঋতুর বিভিন্নতার কারনে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারনেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়। মধু সাধারণত তরল আকারে থাকে তাই একে পানীয় বলা হয়। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক,তেমনি রোগ ব্যাধির জন্যও ফলদায়ক ব্যবস্থাপত্র। কেন হবে না,স্রষ্টার ভ্রাম্যমাণ মেশিন সর্বপ্রকার ফল-ফুল থেকে বলকারক রস ও পবিত্র নির্যাস বের করে সুরক্ষিত গৃহে সঞ্চিত রাখে। মধুর আরো একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য এই যে, নিজেও নষ্ট হয় না এবং অন্যান্য বস্তূকে দীর্ঘকাল পর্যন্ত নষ্ট হতে দেয় না।

কুরআন মাজীদে মধুর উপকারিতা

কুরআন মাজীদে মধুর উপকারিতা

মধু সম্বন্ধে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যে, এবং তোমরা প্রতিপালক মধু মধুমক্ষিকে প্রত্যাদেশ করেছেন যে, পর্বতমালায় ও বৃক্ষসমূহ এবং উচ্চ স্থানে মদু চক্র নির্মান কর। এদের উদর হতে বিবিধ বর্ণ বিশিষ্ট পানিয় নির্গত হয়ে থাকে। তন্মধ্যে মানব সমাজের জন্য ঔষধ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা এই ঔষধ সৃষ্টি করেছেন। ইহা কোনো মানুষের বা কোনো কবিরাজ, হেকিম ও ডাক্তরগনের সৃষ্টি ঔষধ নয়।

মধুর উপকারিতা

মধুর উপকারিতা

. ক্যান্সার ও হৃদরোগে মধুঃ পূর্বের আলোচনা হতে পরিস্কার বুঝা যায়, মধুতে ব্যাকটেরিয়া নির্মূলের ক্ষমতা বিদ্যমান। গ্যাষ্টিক ও ডিওডেনাল আলসার-এর জন্য দায়ী” হেলিকোব্যাক্টের পাইলারি” নামক ব্যাকটেরিয়াকে ও নির্মূল করতে পারে। সেই সাথে মধু ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিহত করতে পারে।

২. রূপচর্চায় করে মধুরঃ ইতিহাস প্রসিদ্ধ মিশরের রানী ক্লিওপেট্রা নিঃসন্দেহে বিশ্ববিখ্যাত সুন্দরী ছিলেন। কথিত আছে, তিনি ত্বকের জেল্লা বজায় রাখতে গাধার দুধ দিয়ে গোসল করতেন। আর ময়শ্চারাইজার হিসেবে মুখে নিয়মিত মধু রাখতেন। ময়শ্চারাইজিং ও এন্টিবায়টিক গুন মধুকে সৌন্দর্য চর্চার এক অপরিহার্য উপাদান হিসেবে চিহিৃত করেছে।

৩. রক্ত পরিস্কারঃ প্রাচীনকালে অনেক লোক মধু খেয়ে দীর্ঘ জীবন লাভ করেছেন। একজন স্বাস্থ্যবান দীর্ঘজীবীর কাছে তার সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনের রহস্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, আমার অক্ষুন্ন দৈহিক শক্তির একমাত্র কারণ আমি প্রতিদিন এক চা চামচ পরিমাণ মধু গরম জলে ফুটাইয়া পান করি। মধু খেলে মানুষ নিরোগ, বলমান, ও দীর্ঘজীবী হয়। আয়ুর্বেদ মত অনুসারে আট রকমের মধু আছে। এর মধ্যে কোনো মধুটি তৈরি করে বড় বড় মৌমাছি, কোনোটি বা ছোট মৌমাছি কোনটি বা তৈরি করে ভোমরা । কোনটি বা ফুল থেকে আপনিই ঝরে পড়ে।

বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে মধু ব্যবহারের পদ্ধতি

পেটের রোগ-ব্যাধি, শরীরের পানি শুন্যতায়, হাইপার হাইড্রোসিস, হার্ট থ্রম্বিং শারীরিক দুর্বলতা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্যতায় নিম্নোক্তভাবে মধু ব্যবহার করতে হবে। একে হানি ওয়াটার থেরাপী বলা হয়।

তৈরির পদ্ধতি-প্রথমে পরিস্কার একটি কাঁচের গ্লাসে ১(এক) থেকে ৩(তিন) চামচ মধু নিতে হবে। এরপর এক গ্লাস অথবা পরিমাণ মতো বিশুদ্ধ পানি গ্লাসে ঢালতে হবে এবং উক্ত মধু মিশ্রিত পানি পান করতে হবে। প্রত্যহ ১ থেকে ৩ চা চামচ মধু চেটে চেটে খেতে হবে। সেই সাথে প্রয়োজন অনুসারে ১/২ চা চামচ কালিজিরার তেল চেটে চেটে খেতে হবে।

মধুর উপাদান

মধু জৈবিকভাবে সক্রিয় একটি পদার্থ এবং এর গঠন অত্যন্ত জটিল। মধুর উপাদান নির্ভর করে মৌমাছি যে ফুলের রস পান করছে তার উপর। তবে মধুর সকল উপাদানই মানুষের জন্য উপকারী। মধুতে ৩০০ টির বেশি উপাদান আছে যা মানুষের বিপাক প্রক্রিয়ার জন্য ‍উপকারী।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!