ইসলামি উপন্যাস

ইসলামি উপন্যাসঃ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম সত্য ও সুন্দর ইসলামি উপন্যাস। আশা করছি পড়তে পেরে আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।                                                                                                                                                                                                          আরো পড়ুন>>> জীবনের গল্প

ইসলামি উপন্যাস

ইসলামি উপন্যাস

ইসলামি উপন্যাস

যার কাছে সম্পদ অপেক্ষায় সত্য বড়

আবদুল্লাহ মহানবী (সাঃ) এর একজন সাহাবী। ইসলাম গ্রহনের আগে তাঁর নাম ছিল আবদুল ওজ্জা। পিতৃহীন আবদুল ওজ্জা ছিলো বিশাল বিত্ত-বৈভবের অধিকারী। পিতৃব্যের একমাত্র উত্তরাধিকারী। সুখের সাগরে লালিত আবদুল ওজ্জার বিয়ে হয় এক ধনী কন্যার সাথে। মক্কায় চলছিল তখন ইসলামের দাওয়াত।

ইসলামের দাওয়াত জয় করে নিলো আবদুল ওজ্জার হৃদয়। তিনি ইসলাম গ্রহনের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। একদিন সে পিতৃব্যের কাছে গিয়ে হাজির হয়ে ইসলাম র্ধমকে সত্য ধর্ম হিসেবে অভিহিত করে অনুরোধ জানালো পিতৃব্যকে ইসলাম গ্রহণের জন্যে। পিতৃব্যের কাছে অকল্পনীয় ছিল তার কাছে ভ্রতুষ্পুত্রের এই আহবান। ক্রোধে আগুন হয়ে উঠলেন তিনি।

ভ্রতুষ্পুত্রকে ভয় দেখাবার জন্যে বলে উঠলেন,তোর মত নাস্তিক আমার সম্পত্তির এক কপর্দকও পাবে না। উত্তরে আবদুল ওজ্জা সসম্ভ্রমে পিতৃব্যকে বলল, তার সম্পত্তি অপেক্ষা সত্য অনেক বড়। বলে আবদুল ওজ্জা তার দেহ থেকে বহুমূল্যবান পোশাক খুলে ফেললেন। ছুটে গেলেন বিধবা মাতার কাছে। বললেন মা আমাকে লজ্জা নিবারণের মত কাপড় দাও।

তার মা আবদুল ওজ্জার পিতার আমলের এক জীর্ণ কম্বল ছুড়ে দিলেন পুত্রের দিকে। আবদুল ওজ্জার সেই কম্বল ছিড়ে দুই ভাগ করে এক খন্ড পরিধান করলেন,আরেক খন্ড গায়ে জড়ালেন। তারপর ছুটলেন মদীনার দিকে মহানবীর কাছে। দীর্ঘপথ-পরিক্রমা শেষে মসজিদের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালেন আবদুল ওজ্জা।

আবদুল ওজ্জার মুখের দিকে তাকিয়েই সব বুঝতে পারলেন মহানবী (সাঃ)।

জিজ্ঞেস করলেন তুমি কে ?

আমি আবদুল ওজ্জা, সত্যের সেব।

মহানবী (সাঃ) বললেন তুমি আর ওজ্জার দাস নও, তুমি আল্লাহর দাস আবদুল্লাহ। যাও তুমি আত্মোৎসর্গকারী আসহাবে ছুফফার জামায়াতে প্রবেশ কর। আমার নিকট এই মসজিদেই তুমি থাকবে। মহানবী (সাঃ) অপরিসীম ভালবাসতেন এই আবদুল্লাহ কে।

ভাবে বিভোর আবদুল্লাহ একদিন উচ্চস্বরে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে থাকায় হযরত উমর বিরক্তি প্রকাশ করলেন।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) উমর (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেন, উমর, ওকে কিছু বলো না। এই আবেগের কল্যাণেই তো সে নিজের যথাসর্বস্ব বিসর্জন দিতে সমর্থ হয়েছে।

তাবুক অভিযানের সময় পথিমধ্যে আবদুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। কি সৌভাগ্য আবদুল্লাহর।

স্বয়ং হযরত আবু বকর ও হযরত উমর এগিয়ে এসে তাঁর দেহ কবরে নামাতে লাগলেন। বেলাল তুলে ধরলেন প্রদীপ। আর মহানবী (সাঃ) ব্যাকুল কন্ঠে বলছেন, সসম্ভ্রমে, তোমাদের ভ্রাতাকে সসম্ভ্রমে নামাও। বলতে বলতে স্বয়ং মহানবী কবরে নেমে পড়লেন এবং নিজ হাতে তার দেহ কবরে স্থাপন করলেন।

ইসলামি উপন্যাস

হযরত ওমর (রাঃ)

হযরত ওমর (রাঃ) বর্ণণা করেছেন- ইবনে ওমর(রাঃ) এক বার অসুস্থ হয়ে টাটকা মাছ খাওয়ার বাসনা হল, মদিনা অনেক খুজাখুজির পর তা পাওয়া গেল না। কয়েকদিন পর যখন পাওয়া গেল তখন দের দিনহাম দিয়ে কিনে এনে রান্না করা হল। তারপর একটা রুটির উপর মাছটা রেখে হযরত ওমর (রাঃ) এর সামনে পেশ করা হল, ঠিক এই সময় এক ভিক্ষুক দরজায় এসে হাক দিল। হযরত ওমর (রাঃ) বললেন- এই মাছ উক্ত ফকিরের জন্য দিয়ে দেওয়ার জন্য,,,,

খাদেম আরজ করল জনাব অনেক দিন থেকে যখন মাছ খেতে আপনার মন চাইছিল তখন তা পাওয়া যায় নাই, এখন পাওয়ার পর দের দিরহাম দিয়ে কিনে এনে আপনার জন্য রান্না করেছি। আপনি বললে আমি ভিক্ষুককে এর মূল্য দিয়ে দেই। তিনি বললেন না, এই মাছ রুটির সাথে জরিয়ে তাকে দিয়ে দাও, অতপর খাদেম ভিক্ষুককে বলল-তুমি এটা এক দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করবে ? ভিক্ষুক সম্মতি দিলে খাদেম এক দিরহামের বিনিময়ে তাকে দিয়ে আবার তার সামনে হাজির করল এবং বলল এ মাছটি আপনার জন্য এক দেরহাম দিয়ে কিনে এনেছি।

হযরত ওমর (রাঃ) আবার বলল- ভিক্ষুকের কাছ থেকে দেরহাম ফিরত না নিয়ে এই মাছ সহ রটি টা তাকে দিয়ে এসো।

ইসলামি উপন্যাস

খোদাভীতি ও পরহেযগারি

তাকওয়া ও খোদাভীতি ইসলামের মৌলিক শিক্ষার মধ্যে গণ্য। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,আল্লাহ তাআলার আযাব ও আখেরাতের জবাবদিহিতাকে স্মরণ করে সকল প্রকার মন্দকর্ম থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহ পাকের সমস্ত বিধানবলি মেনে চলা। অর্থাৎ যে বিষয়গুলি আল্লাহ পাক আমাদের উপর ফরজ করেছেন এবং আমাদের প্রত্যেকের জন্য যে হকুম সমুহ আল্লাহ পাক নির্ধারনকরে দিয়েছেন তা আন্তরিকভাবে আদায় করা এবং আল্লাহ তায়লার নিষেধ-করা বিষয় থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা। কোরআন ও হাদীসের বহু জায়গায় বহুবার তাকওয়া অর্জনের উপর গুরুত্ব আরোহ করা হয়েছে। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন,,,,,

হে ঈমানদারগণ ! আল্লাহকে ভয় করো যেমন ভয় করা উচিত( শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত তাকওয়া ও খোদাভীতির ছায়াতলে দ্বীনের হুকুম-আহকাম মেনে চলতে থাকো,) যেন আল্লাহ তাআলার আনুগত্যে নিমগ্ন অবস্থায় তোমাদের মরণ হয়। সূরা আল ইমরান ৩/১০২

অন্য আয়াতে বলেন,

আল্লাহ তাআলাকে যথাসম্ভব ভয় করো এবং তাঁর হুকুম-আহকাম(আলেমগণের কাছ থেকে শোনো ও মানো। সূরা তাগাবুন ৬৪/১৬

আরেকটি আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,

হে ঈমানদারগণ ! তোমরা খোদাভীতির গুণ অর্জন করো, আর আগামী দিনের জন্য কী আমল করেছো তা ভেবে দেখো। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো, ‍যিনি তোমাদের কাজকর্ম সর্ম্পকে অবগত। সূরা হাশর ৫৯/১৮

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!