অভাব অল্প হলে দুঃখও অল্প হয়ে থাকে ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাবঃ চাহিদা বা অভাববোধ থেকেই মানুষের মনে দুঃখবোধ জন্মে। চাহিদার ওপর নির্ভর করে দুঃখবোধের আধিক্য।
ভাবসম্প্রসারণঃ “মানুষের প্রয়োজন যাতে বিধি তাহা দিলেন সকলি, মন গড়া অভাব সৃজিয়া দুঃখ পাই আমরা কেবলি।” পৃথিবীর এ বিরাট কর্মক্ষেত্রে মানুষের জীবনে একটা না একটা অভাব লেগেই আছে। মানুষের জীবন সৃষ্টির সেই আদিকাল থেকেই নিরবচ্ছিন্ন সুখের নয়। এখানে সুখ ও দুঃখ পাশাপাশি বিরাজ করছে। মানুষের এ ঝঞ্ঝাটময় জীবনে কোনো না কোনো অভাব তাকে পীড়িত করে রাখে। ফলে দুঃখ-দারিদ্র, রোগ-শোক নিয়েই জীবন চলছে। কিন্তু অভাবকে যতই দূর করার চেষ্টা হোক না কেন তা যেন মানুষের নিত্যসঙ্গী। মানুষ যদি শুধু অভাবের দিকে খেয়াল করে তবে তার যেন দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। একমাত্র অভাব নিয়ে চিন্তা করার ফলে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের জীবনে আজ দুঃখ-দুর্দশা বেড়ে চলেছে। যারা বিবেকবান তারা কখনো অভাবকে বড় করে দেখে না। আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)-এর জীবন অভাব অনটনে ভরপুর ছিল। কিন্তু তিনি এ অভাবকে দূরে ঠেলে দৈনন্দিন জীবনের কাজ-কর্ম চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর এ আদর্শ আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
যে অভাবের কারণে মানুষের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার সেই অভাবকে বিবেচনা না করলে জীবনের দুঃখ-দুর্দশা যে কত কমে আসে তা একজন অভাবী ব্যক্তিই উপলব্ধি করতে পারে। এ জন্যে জীবন থেকে যত পারা যায় অভাববোধকে কমাতে হবে তাহলেই দুঃখ থাকবে না। প্রকৃতপক্ষে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভাব বড় নয়, সুখের সংসার সৃষ্টিতে দুঃখ দূরীভূত হয়।
মন্তব্যঃ অভাবকে অভাব হিসেবে বিবেচনা না করলে দুঃখের আগমন ঘটে না। তাই জীবন থেকে অভাবকে দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।