চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাবঃ উত্তম চরিত্র মানবজীবনের মুকুট স্বরুপ। জীবনের সাথে প্রাণের যে সর্ম্পক, মানুষের সাথে চরিত্রের সে সর্ম্পক। উত্তমচরিত্র মানুষকে মান মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলে। পক্ষান্তরে চরিত্রহীনতা মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় এবং পশুবৃত্তি জাগ্রত করে ।
সম্প্রসারিত-ভাবঃ মানুষের সর্বোৎকৃষ্ট গুনাবলীর মধ্যে চরিত্র অন্যতম। এর মধ্যে মানুষের প্রকৃত পরিচয় নিহিত। চরিত্রই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক। তাই বিখ্যাত ইংরেজ লেখক সেমুয়্যাল স্মাইলস। তাঁর character প্রবন্ধে বলেছেন : “ the crown and glory of life is character.”
সততা, সত্যনিষ্ঠা, প্রেম, পরোপকারিতা, দায়িত্ববোধ, শৃঙ্খলা এবং কর্তব্যপালন হলো চরিত্রের, মৌলিক উপাদান। এগুলো মানুষ যখন সহজে নিজের মধ্যে বিকশিত করে তোলে এবং স্বতঃস্ফর্তভাবে তার প্রতিটি কথা ও কাজের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়, তখন উত্তম চরিত্র তার স্বভাবের সাথে সমীভূত হয়ে যায় । ফলে দ্দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক আচরণেও উত্তমচরিত্রের বৈশিষ্ট্যাবলি প্রকাশ পেতে থাকে। আর এ পর্যায়ে গিয়ে ব্যক্তি তার চরিত্রকে একটি সম্পদ হিসেবে আবিস্কার করে ।
স্বাস্থ্য ; অর্থ এবং বিদ্যাকে আমরা মানবজীবনের অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচনা করি । কিন্তুূ জীবন ক্ষেত্রে এগুলোর যতই অবদান থাকনা কেন, একক ভাবে এগুলোর কোনোটিই মানুষকে সর্বোত্তম মানুষে পরিণত করতে সক্ষম নয়, যদি না সে সচ্চরিত্রবান না হয়। কারণ সমৃদ্ধিময় জীবনের জন্যে চরিত্র প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে । চরিত্রের মাধ্যমেই ঘোষিত হয় জীবনের গৌরব। চরিত্র দিয়ে জীবনের যে গৌরবময় বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় তা আর কিছুতে সম্ভব নয় বলে সবার উপরে চরিত্রের সুমহান মর্যাদা স্বীকৃত। যার পরশে জীবন ঐশ্বর্যমন্ডিত হয় এবং যার বদৌলতে মানুষ জনসমাজে শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র হিসেবে আদৃত হয়ে থাকে, মূল্যে রয়েছে উত্তম চরিত্র।
মানুষ তার মৌলিক সৌন্দর্য আরও আকর্ষণীয় ও মধুময় করতে সুন্দর সুন্দর পোশাক ও অলঙ্কার ব্যবহার করে এক অনুপম সৌন্দর্যের বিকাশ সাধন করে, কিন্তুূ সে যদি সচ্চরিত্রবান না হয় তা হলে এসবই বৃথা।
নামমাত্র নৈতিকতা বা ন্যায়নিষ্ঠাই চরিত্র নয়, চরিত্রের মধ্যে সমন্বয় ঘটবে মানুষের যাবতীয় মানবীয় গুনাবলী ও আদর্শের। চরিত্রবান ব্যক্তি জাগতিক মায়া, মোহ ও লোভ-লালসার বন্ধনকে ছিন্ন করে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় অবিচল থাকেন।
তাই প্রতিটি মানুষের সাধনা হওয়া উচিত তার চরিত্র সাধনা। চরিত্র গঠনের কাজ শিশুকাল থেকে মরনের আগ পর্যন্ত চলতে থাকে।
মন্তব্যঃ চরিত্রের কাছে পার্থিব সম্পদ ও বিত্ত অতি নগণ্য। প্রাচুর্যের বিনিময়ে চরিত্রকে কেনা যায় না। মানব জীবনে চরিত্রের মত বড় অলংকার আর নেই। চরিত্র মানবজীবনের এক অমূল্য সম্পদ। এ পসঙ্গে ইংরেজি প্রবাদটি প্রণিধানযোগ্য।