কীর্তিমানের মৃত্যু নাই ভাবসম্প্রসারণ

কীর্তিমানের মৃত্যু নাই ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাবঃ সময় অনন্ত জীবন সংক্ষিপ্ত । সংক্ষিপ্ত এ জীবনে মানুষ তার মহৎ কর্মের মধ্য দিয়ে এ পৃথিবীতে স্মরণীয় বরণীয় হয়ে থাকে ।

সম্প্রসারিত-ভাবঃ মানুষ মাত্রই জন্ম ও মৃত্যুর অধীন । পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করলে অনিবার্যভাবেই এক দিন তাকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে আর সেই মৃত্যুর মধ্য দিয়েই সে পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেয় । কিন্তুূ পেছনে থাকে তার মহৎ কর্মের ফসল । যে কর্মের জন্যে সে মরে যাওয়ার পরও পৃথিবীতে যুগ যুগ বেঁচৈ থাকে। মানুষের জীবনকে দীর্ঘ বয়সের সীমারেখা দিয়ে পরিমাপ করা যায় না । জীবনে যদি কেউ ভাল কাজ না করে থাকে তবে সে জীবন অর্থহীন, নিষ্ফল । সেই নিষ্ফল জীবনের অধিকারী মানুষটিকে কেউ মনে রাখে না। নিরব জীবন নিরবেই ঝরে যায় । পক্ষান্তরে যে মানুষ জীবনকে কর্মমুখর করে রাখে এবং যার কাজের মাধ্যমে জগৎ ও জীবনের উপকার সাধিত হয় তাকে বিশ্বে মানুষ শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে । সেই স্বার্থক মানুষের কাজের অবদান বিশ্বের বুকে কীর্তিত হয়ে কৃতী লোকের গৌরব প্রচারিত হতে থাকে ।

কীর্তিমান লোকের যেমন মৃত্যু নেই, তেমনি শেষও নেই, কারন এই পৃথিবীতে সে নিজেস্ব কীর্তির মহিমায় লাভ করে অমরত্ব। কীর্তিমানের মৃত্যু হলে তার দেহের ধ্বংস সাধন হয় বটে, কিন্তুূ তার সৎ কাজ এবং অম্লান-কীর্তি পৃথিবীর মানুষের কাছে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে । তাঁর মৃত্যুর শত শত বছর পরেও মানুষ তাকে স্মরণ করে। তাই সন্দেহাতীত ভাবে বলা যায় যে, মানবজীবনের প্রকৃত সার্থকতা , কর্ম-সাফল্যের উপর নির্ভরশীল ।একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মানুষ পৃথিবীতে আসে এবং সে সময়সীমা পার হওয়ার সাথে সাথে সে বিদায় নেয় পৃথিবী থেকে । এ নির্দিষ্ট সময়সীমা সে যদি গৌরবজনক কীর্তির স্বাক্ষরে জীবনকে মহিমান্বিত করে তুলতে সক্ষম হয়, মানব কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে, তবে তার নশ্বর দেহের মৃত্যু হলেও তাঁর স্বকীয় সত্তা থাকে মৃত্যুহীন গৌরবোজ্জ্বল কৃতকর্মই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে যুগ থেকে যুগান্তরে । মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মধ্য দিয়ে । যে যত ভাল কর্ম মানুষকে উপহার দেয় অথবা যে কর্মের ফলে মানুষের অনেক উপকার হয় এবং পরবর্তীতে তাকে সব সময় স্মরণ করে তাকেই কীর্তিমান বলে । এমন সব কীর্তিমান ব্যক্তিকে সবাই ভালবাসে দুনিয়াতে এবং মৃত্যুর পরেও তাকে স্মরণ করে বার বার । তার কীর্তিতের কথা সব সময় সবাই শেয়ার করে সবাইর মাঝে যত ‍দিন এই দুনিয়া থাকবে তত দিন তার কথা তার সুকর্মের কথা মানুষ স্মরণ করবে । আর এই জন্যেই বলে কীর্তিমানের মৃত্যু নাই কথাটি আসলে বাস্তব ধর্মী কথা ।

মন্তব্যঃ মানুষের দেহ নশ্বর কিন্তুূ কীর্তি অনিবশ্বর । কেউ যদি মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করে , তবে মৃত্যুর পরেও তাঁর এ কীর্তির মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয়ের মণি কোঠায় চিরকাল বেঁচে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!